Source : Google |
ড্রেসিংরুমে ঢুকে যাওয়ার ঠিক আগের মূর্হুত। তিনি তার দেশের সাংবাদিক, গ্যালারির সবচেয়ে কাছে থাকা আর্জেন্তিনীয় সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়ছেন। মিক্সড-জোনে সাংবাদিকদের মধ্যেই রয়েছেন তার ঘনিষ্ঠতম সাংবাদিকদের একজন, হার্নান ক্লজ। আর্জেন্তিনার অন্যতম জনপ্রিয় ক্রীড়া দৈনিক ওলে-র সিনিয়র ফুটবল সাংবাদিক। এই বিশ্বকাপে গ্রুপ লিগের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে দলের অপ্রত্যাশিত হারের পর একমাত্র তার সঙ্গেই কথা বলেছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময় রাত আড়াইটে) দেশকে বিশ্বকাপে ষষ্ঠবার ফাইনালে নিয়ে যাওয়ার পর সীমাহীনের উচ্ছ্বাসের মধ্যেও তার ব্যতিক্রম হল না। হার্নান ক্লজকে একান্তে ডেকে নিলেন লিওনেল মেসি। ছোট কিন্তু একান্ত একটি সাক্ষাৎকার। কিন্তু কী আশ্চর্য! ক্লজ লিখে ফেলেছেন, "মেসির হাত নেড়ে ড্রেসিংরুমে ঢুকে যাওয়ার সময় তাকিয়ে ছিলাম গ্যালারির দর্শক, আর আমার সতীর্থ সাংবাদিকদের দিকে। মেসি হাসছেন। আমাদের চোখে আনন্দাশ্রু!" সাংবাদিকরা আগেই জানতেন। তাদের মাধ্যমে দেশের ফুটবল পাগলরাও ইতিমধ্যে জেনে ফেলেছেন। ক্লজকে সরকারিভাবে বলেই দিলেন, আর নয়। রবিবারই জীবনের শেষ বিশ্বকাপের ম্যাচ হতে চলেছে তার।"
একটা মহারাজকীয় বিদায়ের ছবি এখন থেকেই আঁকার চেষ্টা হবে। তার টিম ম্যানেজমেন্ট এবং দেশের ফুটবল ফেডারেশনও হয়ত সক্রিয় হয়ে উঠবে এই বিষয়ে। কাতারে হয়ত উড়িয়ে আনা হবে আন্তোনেল্লা ও তাদের সন্তানদের। ফাইনালের ফল যাই হোক না কেন, বিপক্ষের ফুটবলাররা হয়ত ম্যাচের শেষে বিশ্বফুটবলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফুটবলারকে গার্ড-অফ-অনার দেওয়ার জন্য লাইন করে দাঁড়াবেন! ম্যাচের শেষে ফিফার প্রেসিডেন্ট-সহ অন্যান্য কর্তাদের মধ্যেও মেসির জন্য ফুলের তোড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার হিড়িক পরে যেতে পারে।
Source : DW |
তবে ক্লজের কথায়, মেসির ভাবনায় এখন শুধু ফাইনাল, আর কিছু নয়। বিশ্বকাপের মত রাজসূয় যজ্ঞে শেষবারের মত 'জাস্টিস' চাইছেন তিনি! প্রথম এবং শেষবারের মত বিশ্বকাপ জিতে রবিবার লুসাইল স্টেডিয়াম থেকে রাজকীয় বিদায়ের ছবিটা তিনি নিজেই যে আঁকতে চাইবেন সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। আর ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে তিন গোলে জয়ের ম্যাচ নিয়ে মেসির বিশ্লেষণ? ক্লজের কাছে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন জুলিয়ান আলভারেজের। মঙ্গলবার দলের তিন গোলে যার দুটো গোল। তার মধ্যে নিজের দ্বিতীয় গোলটা আর্কাইভে ঢুকে পড়তে পারে! অসমান মাঠে বল বাউন্স করছিল। তার মধ্যে প্রায় ৪০ গজের এক অবিশ্বাস্য দৌড়। সঙ্গে বল আর তছনছ ক্রোয়েশিয়ার মাঝমাঠ ও এমনকী রক্ষণও। মেসি বলেছেন, "অসাধারণ খেলেছে আলভারেজ। ওই ক্রোয়েশিয়াকে ভেঙেছে। আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছি ওকে দেখে।" ২০১৪-র ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালের আগের দিন এই আলভারেজই আর্জেন্তিনার প্র্যাক্টিস দেখতে গিয়ে লাইনের ধারে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন! মেসির একটা অটোগ্রাফ নেওয়ার জন্য। বয়স মাত্র ২২ বছর। জহুরী পেপ গুয়ার্দিওলার চিনতে ভুল হয়নি আর্জেন্তিনীয় স্ট্রাইকারকে। ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-তে সই করানোর পরই পেপ বলেছিলেন বিশ্বফুটবলে এসে গিয়েছে এক নতুন হীরে! মঙ্গলবার রাতে সেই হীরের দ্যুতি দেখল ফুটবলবিশ্ব।
কোচ স্কালোনির প্রশংসাও মেসির মুখে। ক্লজযে বলেছেন তিনি, "রক্ষণ এবং মাঝমাঠের বোঝাপড়া তার জন্যই তৈরি হয়েছে। যে কারণে ক্রোয়েশিয়া প্রতি আক্রমণ তৈরি করার জন্য ফাঁকা জায়গা পায়নি।"
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment. Feel free to contact for any queries, suggestions or any proposal.